মোহাম্মদ ফয়সাল আলম:
এডিবি‘র এই ঋণ অনুমোদন বাংলাদেশের গ্রামীণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
এই ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক সম্প্রদায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেচের সুবিধা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ উন্নত হলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকির এই পরিসংখ্যান বাস্তবতার একটি কঠিন ছবি তুলে ধরে। বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকের ভিত্তিতে সপ্তম স্থান অর্জনের মানে হলো, দেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। কৃষি উৎপাদনে ২০৫০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্ষতি হলে, এর প্রভাব দেশের অর্থনীতি এবং খাদ্য নিরাপত্তার উপর ব্যাপক হতে পারে।
বিশেষ করে যেসব নারীরা জলবায়ু ও কৃষির ওপর নির্ভরশীল, তারা এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার হতে পারে। তাদের জীবিকা ও সচ্ছলতার জন্য জলবায়ু অভিযোজন এবং সহনশীল কৃষি পদ্ধতির গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এডিবি’র এই ঋণ সহায়তা সেসময় এই সমস্যাগুলি মোকাবিলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করে। এই ধরনের প্রকল্প জলবায়ু অভিযোজনের জন্য সহায়ক হতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য সহায়তা প্রদান করতে পারে।
পুষ্কর শ্রীবাস্তবের মন্তব্য অনুসারে, এই প্রকল্পটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের অংশ হিসেবে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যতা কমানো এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে। বিশেষ করে নারীদের এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে।
এধরনের প্রকল্পগুলি শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সহায়ক নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে, কৃষি উৎপাদন ও কৃষকের জীবনমান উন্নত হবে, যা বৃহত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে। এডিবির প্রকল্পটি বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনার পরিকাঠামোকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে এবং ৬ লাখের বেশি মানুষের জীবনমানের উন্নতি সাধন করবে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন দ্বারা পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর দক্ষতা বাড়ানো হবে।
এর পাশাপাশি, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি, কার্যক্রম তদারকি, এবং জলবায়ু অভিযোজন সংহতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতাও বাড়ানো হবে। এই ধরনের উদ্যোগগুলো পানি ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।