খেজুর আমদানিতে শুল্ক ছিল ৫৩ শতাংশ, ৮ ফেব্রুয়ারি ১০ শতাংশ কমিয়ে করা হয়েছে ৪৩ শতাংশ। শুল্ক কমানোর পরও দাম কমেনি খেজুরের। উল্টো দাম বেড়েছে। যদিও বন্দর থেকে খেজুর খালাসের পরিমাণও বেড়েছে। গত কয়েক দিনে ৬০৫ কনটেইনার খেজুর খালাসের কার্যক্রম চলছে এবং প্রতিদিনই খালাস অব্যাহত রয়েছে।
রোজার মাসে ইফতারে খেজুর মুসলমানদের কাছে ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। রমজান মাস এলেই ভোক্তাদের চাহিদার শীর্ষে থাকে বিদেশি এ ফলটি। প্রতি বছরই রোজায় খেজুরের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবারের দামবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সাধারণ মানের বিভিন্ন জাতের খেজুরও সাধারণ মানুষের অনেকটা নাগালের বাইরে। বাজারে অন্য নিত্যপণ্যের দামে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষের কাছে ইফতারিতে খেজুর তাই হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসী পণ্য।
সরেজমিনে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী বাদামতলী ফলের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, সৌদি, মিশর, দুবাই, তিউনিসিয়া, ইরান থেকে আসা বিভিন্ন জাতের খেজুরে ভরা বাজারে। আমদানি করা নানা জাতের খেজুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি, দাবাস, জাহিদি, সায়ের, আজওয়া, মেডজুল, সুক্কারি, মাশরুখ প্রভৃতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবছর পাইকারিতে পাঁচ কেজি মরিয়ম খেজুর মানভেদে চার হাজার ৩শ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর ছিল ২৫শ থেকে সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা। কালমি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪২শ টাকায়, যা বিগত বছরে ছিল ২৫শ টাকা। প্রতি পাঁচ কেজি আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ থেকে ৪২শ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২৬শ থেকে সর্বোচ্চ ৩২শ টাকা। এবছর মাবরুম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ থেকে চার হাজার ৫শ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২২শ থেকে শুরু করে ৩২শ টাকা। গত বছর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া মেডজুল এবার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবছর দাম বাড়ায় মাবরুম, মরিয়ম, আজওয়া, কালমির যে চাহিদা ছিল সেটা কিছুটা কমেছে। সাধারণ মানুষ বাজারে তুলনামূলক কম দামি খেজুর খুঁজছেন। বাদামতলীতে পাঁচ কেজি ওজনের জাহিদি খেজুরের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৫শ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৬শ ৫০ থেকে ৯শ টাকা। ১৮শ টাকায় বিক্রি হওয়া দাবাস বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকায়।
খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি খেজুরের দাম বেড়েছে ২শ-৬শ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারের এবার বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি খেজুর এক হাজার থেকে ১২শ টাকার নিচে মিলছে না। মধ্যমমানের দাবাস, মাশরুখ, সুক্কারি ৫শ ৫০ থেকে ৮শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫০ টাকা কেজি দরের জাহিদি এবার ৩শ টাকা হাঁকাচ্ছে দাম।
ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানিনির্ভর হওয়ায় আমদানি ব্যয়, ভ্যাট, করসহ নানা খরচের কারণে খেজুরের দাম এবার গতবারের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এছাড়াও ডলারের দাম বৃদ্ধি, কাস্টমস ডিউটি ট্যাক্স, রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স প্রভৃতি দাম বাড়ার প্রধান কারণ।