কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আনুমানিক পাঁচ হাজার বিঘা পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকারও বেশি ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
রোববার (১০ মার্চ) বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পাথরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পাথর ঘাট এলাকার পানবরজ থেকে এ আগুনের সূত্রপাত বলে জানা গেছে। পরে আগুন গোসাইপাড়া, রায়টা, মাধবপুর, নিশ্চিন্দ্রপুর পাড়াসহ আশপাশের গ্রাম পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে দুই হাজারের বেশি পানচাষির কয়েক হাজার পানবরজ আগুনে ভস্মীভূত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান জানান, দুপুরে রায়টা পাথরঘাট এলাকায় একটি পানের বরজে আগুনের সূত্রপাত হয়। পানের বরজের পাটকাঠি এবং দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তাৎক্ষণিক ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে কুষ্টিয়ার সব ইউনিট এবং পাবনা ও মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মোট ৮টি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা চার ঘণ্টা চেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও জানান, ওই এলাকায় পানি না থাকায় আমাদের রিজার্ভ পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলাম। প্রচণ্ড বাতাসের কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষি খলিল হোসেন বলেন, আমার দুই বিঘা পান ছিল। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন বলেন, অগ্নিকাণ্ডে পানচাষি ও এলাকার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। পানচাষের ওপর এ অঞ্চলের অর্থনীতি নির্ভর করে। এ ক্ষতি সহজে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
এ ঘটনার পর কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুন্ডু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।