দেশে ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত

২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করবেন। বেশিরভাগ রোগীই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। অনেক পরিবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে পুরো নিঃস্ব হয়ে যায়। ফলে কিডনি রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। তাই ‘কিডনি সুরক্ষা বিমা’ চালু করতে পারলে অসংখ্য রোগীর জীবন বাঁচবে।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য-চিকিৎসায় সমঅধিকার অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন ‘কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি’র (ক্যাম্পস) প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ডা. এমএ সামাদ।

বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। ১৪ মার্চ বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ডা. সামাদ বলেন, উন্নত দেশগুলোতে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে হয়। রোগীর পকেট থেকে টাকা দিতে হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আংশিক খরচ সরকার বহন করে থাকে। তিনি বলেন, আশা করি, শিগগিরই আমাদের দেশে ‘কিডনি সুরক্ষা বীমা’ চালু হবে। এর ফলে কিডনি রোগীদের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে এবং সবাইকে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে।

আরও পড়ুন:  রিমালের প্রভাবে ঝুঁকিতে ৩২ লাখ শিশু: ইউনিসেফ

ডা. সামাদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, এরমধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না যে, মরণঘাতী এ রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে। প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়। যার ৮৫ ভাগই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। উন্নত দেশেও কিডনি বিকলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সরকারগুলো হিমশিম খাচ্ছে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগী শতকরা ১৬-১৮ ভাগ। কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল। একবার কিডনি বিকল হয়ে গেলে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এই চিকিৎসা এতটাই ব্যয়বহুল যে, শতকরা ১০ জন রোগী তা বহন করতে পারে। তাই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে ৯০ ভাগ রোগী বিনা চিকিৎসায় অথবা আংশিক চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করে। পক্ষান্তরে, সবাই যদি কিডনি রোগের ব্যাপকতা, ভয়াবহতা, পরিণতি ও কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করে, তাহলে ৫০-৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এই মরণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন:  মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন শেখ আব্দুর রশিদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *