বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি সুস্পষ্ট বার্তা : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা, প্রামাণ্য চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যে দুই ধরণের উপাদান ছিল। একটি হচ্ছে- অস্পষ্টতা, আরেকটি হচ্ছে- স্পষ্টতা। এ ভাষণে দুই ধরণের বার্তা ছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সন্দিহান ছিল, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তারা ৭ মার্চের ভাষণ শুনে দ্বিধান্বিত হয়ে গিয়েছিল, তাদের জন্য ভাষণটি ছিল অস্পষ্ট। আর যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, তারা পরিস্কার বার্তা পেয়েছিল, কী বলা হচ্ছে, কী করতে হবে। যারা অবস্থানগতভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল এবং সুস্পষ্ট বার্তাটি পায়নি, তারাই ভাষণটি নিয়ে পরবর্তীতে অনেক ধরণের বিতর্কিত কথা বলার চেষ্টা করেছে।

আরও পড়ুন:  দেশকে ধ্বংস করার যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন : প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের মধ্যে যে বার্তা বঙ্গবন্ধু দিতে চেয়েছেন, এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ সেটা সুস্পষ্টভাবে বুঝেছিল। যারা বোঝার, তারা বার্তা পেয়েছিল এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল। স্বাধীনতার প্রতিটি ধাপে ধাপে সে প্রস্তুতি আমরা দেখেছি।’ যাদের সাহসী উদ্যোগের ফলে ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম দেখতে ও শুনতে পেয়েছে, তাদের এ সময়  ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, আগামী প্রজন্মকে ৭ মার্চের ভাষণের ইতিহাস জানাতে হবে। দেশের জনগণের কাছে গল্পের মতো করে এ ভাষণের ইতিহাস বলতে হবে, যেনো তারা এটি শুনে ও বুঝে আত্মস্থ করতে পারে। স্বাধীনতার নায়কদের আগামী প্রজন্মের কাছে বড় করে তুলে ধরতে হবে। তাহলে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম আরও বড় আকারে জাগ্রত হবে।

আরও পড়ুন:  "বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক" চালু করছে বাংলাদেশ

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের পরে কেনো স্বাধীন দেশে সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা না করে ৭ মার্চের ভাষণ লুকিয়ে রাখতে হলো ? তাহলে কি ৭৫ এর পরে সেই পাকিস্তানি হানাদাররা এদেশে ফিরে এসেছিল ? এরা কারা ? এরা কি স্বাধীনতার পক্ষের হতে পারে ? এই সাধারণ প্রশ্নটি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।’
আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে ৭ মার্চের ভাষণের ওপর নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর এবং প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ আলী সরকার। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *