আমাদের দেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি । যান্ত্রিক জীবনে পিষ্ট হয়ে মানুষ ভুলে গেছে বিনোদনের কথা। তবুও মানুষ ছুটে চলছে দেশে- বিদেশে। অল্প খরচে দেশের মধ্যে ফহুরতে পারেন পরিবার পরিজন নিয়ে। আজ আমরা কিছু জায়গার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব। 

 ঢাকায় ও আশপাশের কিছু দর্শনীয় স্থানে ঘুরে আসতেই পারেন। আমরাই দেখিয়ে দিচ্ছি জায়গাগুলো।

7

সুবর্ণগ্রাম 
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিনোদনের সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে সুবর্ণগ্রাম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্ট  সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন আকর্ষণীয় রাইড, ওয়াটার পার্ক, রেস্টুরেন্ট, জুস বার, কফি শপ, লাক্সারি রিসোর্ট, কার পার্কিং এবং পিকনিক স্পট ছাড়াও এই পার্কে স্পিড বোটে চড়ে সমস্ত ওয়াটার পার্ক ঘোরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
সুবর্ণগ্রাম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্টে যেকোনো ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠান, কর্পোরেট সভা-সেমিনার এবং পিকনিক আয়োজনের সুব্যবস্থা রয়েছে। রাজধানী ঢাকার বেশ কাছে অবস্থান হওয়ার কারণে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই বিনোদন পার্কটিতে প্রতিদিন সব বয়সের অসংখ্য দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে।

3

নিকলি হাওড়
ডে ট্রিপের জন্য উপযুক্ত জায়গা নিকলি হাওড়। খোলামেলা পরিবেশে লিপ্ত প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসতে পারেন কিশোরগঞ্জের নিকলি হাওর থেকে। ঢাকা থেকে বাইক নিয়ে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জ শহরে। সেখান থেকে নিকলি ঘাট। ঘাট থেকে নেকা ভাড়া করে ঘুরে দেখুন হাওর। মনে রাখবেন, বর্ষার শেষ দিকে হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। বাইক নিয়ে গেলে হাওরের পাশে বাইক রেখে আপনি ঘুরে আসতে পারবেন। তবে নিকলী হাওর যেতে চাইলে খুব সকালে রওনা ঢোকা থেকে রওনা হতে হবে।

আরও পড়ুন:  সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা

পানাম নগর
পানাম নগর নারায়ণগঞ্জ জেলার, সোনারগাঁওতে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর। বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর -প্রাচীন সোনারগাঁর এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। সোনারগাঁর ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে। সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকে উত্তর দিকে হাঁটাপথেই পৌঁছানো যায় অর্ধ্বচন্দ্রাকৃতি পানাম পুলে। (যদিও পুলটি ধ্বংস হয়ে গেছে)। পুলটির দৈর্ঘ্য ছিলো ৭২ ফুট আর প্রস্থ ছিলো ১৫.৫ ফুট, মাঝখানটা ছিলো উঁচু। এই পুল পেরিয়েই পানাম নগর এবং নগরী চিরে চলে যাওয়া পানাম সড়ক। আর সড়কের দুপাশে সারি সারি আবাসিক একতলা ও দ্বিতল বাড়িতে ভরপুর পানাম নগর।

আরও পড়ুন:  ডিএমপির অফিস আদেশ স্থগিত, আসামি গ্রেপ্তারে লাগবে না অনুমতি

8

জিন্দা পার্ক
জিন্দা পার্ক  নারায়ণগঞ্জ জেলার দাউদপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জিন্দা পার্কে ২৫০ প্রজাতির দশ হাজারের বেশি গাছ, ৫ টি জলাধার ও অসংখ্য পাখি রয়েছে। চারপাশে সবুজের আচ্ছাদন। যেদিকেই তাকাবেন এখানে সবুজ গাছপালা তার সাথে রয়েছে নানা রকমের ফুল ও ফল। গাছের উপর রয়েছে টং ঘর, বড় সান বাধানো পুকুর, পুকুরের উপর সাঁকো, রয়েছে মাটির ঘর। এছাড়া পার্কের ভেতরে আছে মার্কেট, একটি অতি সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর লাইব্রেরী, ক্যান্টিন ও মিনি চিড়িয়াখানা। আর নৌবিহারের জন্য পার্কের লেকে আছে ৮ টি সুসজ্জিত নৌকা। জিন্দা পার্কের বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণশৈলী আপনাকে মুগ্ধ করবে। এই পার্কটির বিশেষত্ব হল এটি এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। ১৯৮০ সালে ৫০০০ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা অগ্রপথিক পল্লী সমিতির দীর্ঘ ৩৫ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হচ্ছে এই জিন্দা পার্ক।

আরও পড়ুন:  ৫ মে নিয়মিত ফ্লাইটেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
একসময় সবার ডে ট্রিপের উপলক্ষ চিড়িয়াখানা হলেও এখন সবাই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কথাই ভাবেন। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে প্রায় ৩,৬৯০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে। এই পার্কে প্রাকৃতিক পরিবেশে বন্য প্রাণীদের বিচরণ দেখতে সারা বছরই দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। এছাড়াও এখানে রয়েছে পাখি শালা, প্রজাপতি সাফারি, জিরাফ ফিডিং স্পট, অর্কিড হাউজ, শকুন ও পেঁচা কর্নার, এপ ওয়ার্ল্ড, বোটিং, লেইক জোন, আইল্যান্ড, প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, ফ্যান্সি কার্প গার্ডেন আরো অনেক বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীর সমারোহ। এখানে একা একা ঘুরতে গেলে মন্দ লাগবে না। অনেকেই দলবেধে ঘুরাঘুরির পক্ষে না। তাদের জন্য বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক একটি আদর্শ জায়গা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *