রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রীন কোজি কটেজ নামের বহুতল ভবনে লাগা আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে ৪৫টি নিরীহ প্রাণ। আগুনে স্বজনহারাদের বুকফাটা আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস।
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন। তাদের পরিবার-পরিজনকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা কারো জানা নেই। তবে যেসব ঈমানদার অগ্নিকাণ্ড বা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাদের জন্য রয়েছে মহানবী সা:-এর সুসংবাদ।
রাসূলুল্লাহ সা: আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে শহীদ আখ্যা দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে জাবের তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ স: তার বাবা জাবের রা:-কে তার রোগশয্যায় দেখতে গেলেন। তার কাছে গিয়ে দেখলেন নারীরা কেঁদে কেঁদে বলছে, আমরা মনে করেছিলাম, তুমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে।
তখন মহানবী সা: বলেন, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ না হলে তোমরা কাউকে শহীদ মনে করো না? এমন হলে তো তোমাদের শহীদের সংখ্যা অতি অল্পই হবে। আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তি শহীদ, পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ, কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, নিউমোনিয়াজাতীয় কঠিন পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, যে নারী গর্ভাবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সেও শহীদ…। (আবু দাউদ: ৩১১১)
মানুষের মৃত্যু অবধারিত। তবে কারো মৃত্যু যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা বা কঠিন রোগে হয়, আল্লাহ তার বিনিময়ে তাকে শাহাদাতের মতো অতি সম্মানের মর্যাদা দিয়ে দেন।
আগুনে পুড়ে মারা গেলে কিংবা পানিতে ডুবে মারা গেলে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হবে—এই কথাটি সত্য। এই মর্মে হাদিস রয়েছে। কিন্তু শহীদের মর্যাদা পাওয়া আর শহীদ হওয়া এক কথা নয়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এখানে যত ফজিলতের হাদিস আছে, সবগুলো শর্ত সাপেক্ষে। অবশ্যই তার মৃত্যু হতে হবে ঈমানের উপর। এমন কোনো কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারবেন না, যা ইসলামের পরিপন্থি। তিনি বড় ধরনের কোনো অন্যায় বা গুনাহর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।