মধ্যরাতে ইলিশের অভয়াশ্রমে দুমাসের জন্য মাছ শিকার বন্ধ

আজ রাত ১২টার পর থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই দুই মাস ইলিশের অভয়াশ্রমে সব ধরনের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এ আইন ভঙ্গকারীকে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। 

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। জেলেরা নদী থেকে জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ মাছ শিকারের সরঞ্জাম নদী থেকে উঠিয়ে নিচ্ছেন।

অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা কালীন সময়ে মৎস্য শিকার বন্ধে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ। জেলেদের নিয়ে সভা, ব্যানার, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং এর মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে।

এদিকে, ইলিশের টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলা জেলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকার দুটি অভয়াশ্রমে শুরু হচ্ছে সকল ধরনের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা। এর মধ্যে মেঘনা নদীর চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভেদুরিয়া হতে পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত তেতুঁলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে।

আরও পড়ুন:  নৌকা প্রতীকে ভোট করবে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীরা

রাত ১২টা পর থেকেই মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। তাই শেষ সময় নদীর কাছাকাছি মাছ শিকারে ব্যস্ত জেলেরা। অনেকেই আবার নৌকা জাল তীরে উঠিয়ে রেখেছেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আমাদের মা ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়েছে। সে সব ডিম ফুটে যেসব ইলিশের বাচ্চা রয়েছে তা এখন জাটকা পর্যায়ে। মার্চ-এপ্রিল দুই মাস যদি আমরা এসব জাটকা শিকার বন্ধ রাখি, তাহলে তারা পূর্ণ ইলিশে রূপ নেবে। তাই সরকার প্রতিবছর এ দুই মাস মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর অভয়াশ্রমে সব ধরনের মৎস্য শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এতে করে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য মাছের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন:  শিক্ষার্থী নয়, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের পেছনে সন্ত্রাসীরা: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা মাহবুব মাঝি, সাখাওয়াত মাঝি ও হাসেম আলী বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রথম দিকে অনেক জেলে না মানলেও এখন প্রায় সবাই মানছে। কারণ, এতে জেলেরাই লাভবান হয়।

জেলে ফরিদ হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে মেঘনা নদীতে ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে। তাই তারাও চান অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছের অবস্থান বৃদ্ধি পাক।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখতে পাচ্ছি ভোলার নদ-নদীতে ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাস, পোয়াসহ অন্যান্য মাছের আধিক্য বেড়েছে। যার সুফল সংশ্লিষ্টরা ভোগ করছে। তাই আজ রাত ১২টার পর থেকে দুটি অভয়াশ্রমে  নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে দিনে এবং রাতে অভিযান চলবে। অভিযানে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি স্বস্ব উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, নৌ পুলিশসহ সংশ্লিস্টরা কাজ করবে।

আরও পড়ুন:  মার্কিন ভিসায় সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ অনুমোদিত নয়: দূতাবাস

মৎস্য বিভাগ জানায়, গত বছরের এক নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮ মাস জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাটকা শিকার থেকে জেলেদের বিরত রাখতে ’ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মে’ এ চার মাস ৮৯ হাজার ৬০০ জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *