পারমাণবিক যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমাদের সতর্ক করলেন পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলো উত্তেজনা বাড়ালে পারমাণবিক যুদ্ধের ‘প্রকৃত’ ঝুঁকি সৃষ্টি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, মস্কোর হাতে থাকা অস্ত্রগুলো পশ্চিমা দেশগুলোয় আঘাত হানতে সক্ষম।

আজ বৃহস্পতিবার মস্কোয় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন পুতিন। পশ্চিমাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এখন কোনো দেশ যদি কিয়েভের সহায়তায় সৈন্য পাঠানোর সাহস দেখায়, তার ‘পরিণতি হবে দুঃখজনক’।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের (পশ্চিমা দেশ) শেষ পর্যন্ত এটা মাথায় রাখা উচিত যে আমাদের এমন সব সমরাস্ত্র রয়েছে, যেগুলো তাদের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। পশ্চিমাদের সব পদক্ষেপই এমন সংঘাতের প্রকৃত ঝুঁকি সৃষ্টি করে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে। আর এভাবে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।’

আরও পড়ুন:  ডিএমপির সাবেক কমিশনারকে বিমানবন্দরে আটকে দিলো পুলিশ

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলার পর থেকে বেশ কয়েকবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা তুলেছে মস্কো। পশ্চিমা দেশগুলোও বরাবরই এর সমালোচনা করে আসছে। এরই মধ্যে আবার হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন। তিনি এমন সময় এ কথা বললেন, যখন সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইউক্রেনে ফরাসি সেনা পাঠানোর বিষয়টি নাকচ করছেন না।

গত বছরে ঠিক এই সময়ে ইউক্রেনের পাল্টা হামলার মুখে বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল তারা। তবে ওই বছর গ্রীষ্মে পাল্টা হামলায় ব্যর্থ হওয়ার পর যুদ্ধের ময়দানে রক্ষণাত্মক অবস্থানে যায় কিয়েভ।

এ ছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘ সময় ইউক্রেনের পাশে থাকা পশ্চিমা দেশগুলোকে নতুন সহায়তা নিয়ে দোলাচলে থাকতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে আটকে আছে ইউক্রেনের জন্য নতুন ৬ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা তহবিল। কিয়েভের এমন সংকটের মুহূর্তে সম্প্রতি দেশটির আভদিভকা শহর দখল করেছে রুশ বাহিনী। একই সঙ্গে অন্য এলাকাগুলোতেও অগ্রগতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

আরও পড়ুন:  গরমে পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা

এদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার খড়গের নিচে থাকা রুশ অর্থনীতিও অনেকের প্রত্যাশার চেয়ে বেশ ভালো করছে। নিষেধাজ্ঞার জেরে মস্কো সবচেয়ে ভয়াবহ যে সংকটের মধ্যে পড়তে পারত, তা থেকে বাঁচাতে রাশিয়াকে বড় সহায়তা করেছে সামরিক উৎপাদনে বিপুল বিনিয়োগ এবং সেনাসদস্যদের উচ্চ বেতন ও নানা সুবিধা।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন পুতিন। ১৫ থেকে ১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে পুতিনের কোনো প্রকৃত বিরোধী নেই। ফলে নির্বাচনের ফল কী হবে, তা অনেকটাই নিশ্চিত। নির্বাচনের আগে চলতি বছরের শুরু থেকে গণমাধ্যমে পুতিনের উপস্থিতিও বেড়েছে। সম্প্রতি একটি বোমারু বিমানে চড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *