ড. সালেহা কাদের
হাজার বছরের নন্দিত জনপদ সন্দ্বীপ। শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশ্বজোড়া আলোক উজ্জ্বল ভূমিকায় অভিষিক্ত এই জনপদ। বাংলাদেশের অনেক কৃতি সন্তানের জন্ম এখানে। এমনকি ইতিহাসের ম্যাগনাকার্টা খ্যাত ছয়দফা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিলো প্রাচীন এই ঐতিহ্যময় জনপদে। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অনন্য সিংহদ্বার বলে বিবেচিত। ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রেও দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দ্বীপ এটি। সন্দ্বীপকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলেছে। বদলে গেছে এই জনপদের জনজীবন। সন্দ্বীপ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অনন্য উদাহরণ।
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপবাসী কখনো ভাবেনি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে সন্দ্বীপ। সন্দ্বীপে এখন আলোর উৎসব চলছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম জনপদ হিসেবে সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি সন্দ্বীপবাসীর জন্য হাসিনা সরকারের অনন্য উপহার। এর মাধ্যমে সন্দ্বীপের সম্ভাবনা আরো বহুমাত্রিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবর্তন এসেছে দ্বীপের জীবনযাত্রায়, যোগাযোগ ব্যবস্থায়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে। বিদ্যুতের সুবাদে ব্রডব্যান্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পেয়ে বিশ্বযোগ ঘটেছে সন্দ্বীপে।
শিক্ষায় উন্নয়ন:
আমি যেহেতু শিক্ষা নিয়ে কাজ করি তাই একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে বলব সন্দ্বীপে শিক্ষা ব্যবস্থায়ও আধুনিকায়ন দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষার উপকরন স্বল্পতা এখন নেই, এটি ঘুচে গেছে। প্রতিটি স্কুল-কলেজে এখন বহুতল ভবন রয়েছে, মাল্টি মিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে। কম্পিউটার ল্যাবের পাশাপাশি রয়েছে সহজলভ্য ইন্টারনেট সংযোগ। সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীরা জন্মগতভাবে মেধাবী ও সাগর সংগ্রামী। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। বিদ্যুৎ এসে শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বায়নের সঙ্গে যুক্ত করেছে। যা কিছুদিন আগেও ছিল অবিশ্বাস্য। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতার ফসল।
পর্যটনের সম্ভাবনা সন্দ্বীপ :
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর সবুজ, শ্যামল, মনোমুগ্ধকর দেশের সর্বপ্রাচীন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ।সূর্যের কিরণ ও সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তালে উপভোগ করা যায় সূর্যাস্তের সৌন্দর্য। পড়ন্ত বিকেলে সুবজ ফসলের মাঠে দোল খেয়ে যাওয়া দক্ষিণা বাতাস মনে আনে প্রশান্তি। বসন্তে কোকিলর ডাক, গাছে গাছে নানা ফুলের বাহার, শরৎকালের কাশফুল আর নিত্য দেখা মিলে মহিষ-ভেড়ার দল বেঁধে ছুটে চলা। তার উপর সাদা বকের ঝাঁকের ঘুরপাক খাওয়া নয়নাভিরাম দৃশ্য সবই রয়েছে এই দ্বীপে রয়েছে। এছাড়া এখানকার প্রাকৃতিক স্থানগুলোকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
সন্দ্বীপে চিকিৎসা সেবা:
সন্দ্বীপে বিদ্যমান চিকিৎসার মান, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি এবং হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়নও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কমিউনিটি হাসপাতালসহ বিদ্যমান হাসপাতালগুলো মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানে নিঃসন্দেহে সন্দ্বীপে অবদান রাখছে। এক সময় আমাদের স্বাস্থ্যখাতে চট্টগ্রাম নির্ভরতা ছিল। এখন এখানে সরকারি পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল হয়েছে। বিদ্যুৎ আসার পর রোগ নির্ণয়ের জন্য এখানে ল্যাব স্থাপিত হয়েছে। দ্বীপের স্বাস্থ্যখাতে বেসরকারি উদ্যোগ জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি অর্থনীতির জন্য ভালো ভূমিকা রাখছে। ফলে তাৎক্ষণিক সমস্যায় উন্নত চিকিৎসা দ্বীপ বাসি পাচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে বড় হাসপাতাল স্থাপন করা জরুরি।
সরকারের ‘গ্রাম হবে শহর’ এই শ্লোগানটি বাস্তবায়ন হয়েছে সন্দ্বীপে। বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হওয়ার পর এখানে আবাসনখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে গেছে। প্রতিটি বাড়িটি নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন। চট্টগ্রাম ছেড়ে পরিবার গুলো ফিরছে গ্রামে। জমির দাম এখানে আকাশ ছোঁয়া। অবকাঠামোগত উন্নয়নে হাওয়া লাগার পর এই খাত সংলগ্ন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে।
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার যে পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর মধ্যে সন্দ্বীপ ইকোনমিক জোন হচ্ছে। অচিরেই এটি বাস্তবায়ন হলে শিল্প কারখানা বাড়বে,বেকারত্ব ঘুচে যাবে। এছাড়া জেটি ও টার্মিনাল ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁয়ে বিআইডব্লিউটিএ এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের মধ্যে ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি চুক্তি সই হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ নতুন মাত্রা পাবে।
এভাবে গত এক দশকে শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে সন্দ্বীপ জনপ্রতিনিধি যে পরিমাণ উন্নয়ন সন্দ্বীপে করেছে তা সত্যিকার অর্থে নজিরবিহীন। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আপনার আমার ভোট হোক নৌকায়। তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করতে পারবেন। এবার তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এতে বেকার যুবকদের জন্য দেড় কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ ১১টি যুগোপযোগ বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। যা স্মার্ট দেশ গড়ার লক্ষ্যে গৃহীত। আমাদেরও স্মার্ট সন্দ্বীপ গড়ে তোলা এখন নতুন জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব। তাই নতুন দিনের ডাক এসেছে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন সরকার এবং বহির্বিশ্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমগ্র দুনিয়ার চোখ এখন এই নির্বাচনকে ঘিরে। সন্দ্বীপে ইতিমধ্যে নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে। মানুষের মনে নির্বাচন কৌতুহল ছাপিয়ে এখন উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে জনগণ ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৪১ হাজার ৯১৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। যার মধ্যে তরুণদের উপস্থিতি বেশি।
সন্দ্বীপের মানুষ সব সময় নির্বাচনমুখী। এই নির্বাচনে সবার চোখ সন্দ্বীপের দিকে কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এর বাড়ি সন্দ্বীপ। সঙ্গত কারণে নিজ জন্মস্থানের কারণে এখানে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ তৈরি করা এখন বাড়তি দায়। তার জন্মভিটে বলেই নির্বাচনের পরিস্থিতি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। নিঃসন্দেহে বলা যায়,দেশের অন্যান্য আসনের থেকেও বাড়তি নিরাপত্তা এবং বিশেষ গুরুত্বের সাথে সন্দ্বীপ বিবেচিত হবে।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিগত তিন মেয়াদে সন্দ্বীপে নজিরবিহীন উন্নয়ন করছে। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন মেরুকরণ। ভোটের মাঠে প্রার্থী ৮ জন হলেও মূলত আওয়ামী লীগ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। নির্বাচনকে উৎসব মুখর করতে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অবাধ সুযোগ পেয়েছেন। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে। জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে সাধারণ জনগণ।
কেমন প্রতিনিধি সন্দ্বীপবাসী চায়:
বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে দ্বীপ জনপদ সন্দ্বীপ। এই জনপদের মানুষ সাগর সংগ্রামী ইতিপূর্বেই উল্লেখ করেছি। তারা প্রকৃতির মত সরল, সাগরের মত ধীর স্থির আর উর্বর মস্তিষ্কের। সুতরাং তারা তাদের যোগ্য জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে ভুল করবে না। সন্দ্বীপের বর্তমানের প্রধান সমস্যা নৌ যাতায়াত। এই নৌ যাতায়াত, স্বাস্থ্যসেবা এবং ভূমি পুনরুদ্ধার সহ কিছু নাগরিক অধিকার রয়েছে যেগুলো এখানো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।এই তিনটি সমস্যা সন্দ্বীপের জন্য মৌলিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সৃষ্ট সমস্যাগুলো যিনি তার নির্বাচনে ইশতেহারের মধ্য দিয়ে আগামীতে নির্বাচিত সরকারের সাথে সমন্বয় করতে পারবেন তিনিই দল মত নির্বিশেষে প্রতিনিধিত্ব পাবেন।
সন্দ্বীপে আরেক ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে মাদকের ভয়াবহতা। তরুণ প্রজন্ম একেবারে মাদকের সর্বনাশা ঘ্রাসে বুদ হয়ে আছে। একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতে হবে। মাদক বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটাতে হবে। যেমন: আমাদের তরুণদের সংগঠন সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশন এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তরুন প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের জনপ্রতিনিধি যিনি নির্বাচিত হোক না কেন তাকে অবশ্যই মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং মাদকের পরিপন্থী হতে হবে।
সন্দ্বীপের নতুন জনপ্রতিনিধি যিনি হবেন তার কাছে একজন সন্দ্বীপি বলবো, সন্দ্বীপের মৌলিক সমস্যাগুলোর জন্য কাজ করেন। বিশ্বজনীন সন্দ্বীপবাসি তাকিয়ে আছে সুদিনের অপেক্ষায়।
১.
প্রথমত: সন্দ্বীপের প্রধান সমস্যা হচ্ছে নির্বিঘ্নে নৌ-যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ খুবই প্রয়োজন। যদিও আমাদের সন্দ্বীপের সূর্যসন্তান, একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক, স্নেহভাজন ছোটভাই,কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক এবারের জাতিসংঘের ৭৮তম সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সে তার পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নাগরিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রে সন্দ্বীপের নৌ যাতায়াত সমস্যা এবং স্বাস্থ্যখাতে সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলাপ করেছেন। সন্দ্বীপের সকল সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন এবং নির্বাচনের পর এসব বিদ্যমান সমস্যার সমাধান কল্পে কাজ করবেন। তাই এখন দরকার যোগ্য নেতৃত্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে সমাধানের পথ বের করা। তিনি সন্দ্বীপকে ভালোবাসেন সেই নজির তিনি রেখেছেন। এখন দরকার একজন ভালোবাসা ময় মানুষ যিনি মানুষের দুর্ভোগের কথা ভাববেন।
নৌ যাতায়াত নতুন জনপ্রতিনিধির কাছে হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ।
২.দ্বিতীয়ত সমস্যা হচ্ছে সন্দ্বীপের স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করা। এখনো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ। জরুরী সমস্যায় চট্টগ্রাম যাতায়াত এবং নদীপথের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে অনেক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। সুতরাং এখানে জরুরী বিভাগ ও আইসিও ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রসূতি সেবাকে আরও বেশি আধুনিকায়ন করতে হবে বলে মনে করছি।
৩. তৃতীয়ত, মাদকের ভয়াবহতার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। জনপ্রতিনিধি আন্তরিকতার সঙ্গে এসব সিন্ডিকেট এবং সন্ত্রাসীদেরকে চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিলেই মাদক নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
৪. প্রিয় পাঠক আপনারা জানেন, সন্দ্বীপ এক সময় ষাট মৌজার সন্দ্বীপ ছিল। নদী ভাঙ্গনের কবলে আমাদের অনেকগুলো ইউনিয়ন অধুনালুপ্ত। একসময় ক্রসবাদের দরকার ছিল এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি যখন সন্দ্বীপ গিয়েছিলেন তিনি তার বক্তব্যে বলেছিলেন যদি সন্দ্বীপের ক্ষতি হয় তাহলে ক্রসবাধ করে দেয়া হবে। বর্তমানে প্রকৃতির বদৌলতে সন্দ্বীপ তার পুরনো ভূমি ফিরে পেতে শুরু করেছে। চারদিকে চর জেগে উঠার কারণে সন্দ্বীপে নতুন দিনের যাত্রা শুরু হয়েছে।
পুরনো ভূমি নতুন করে পাওয়ার যে আনন্দ সন্দ্বীপবাসী স্বপ্ন দেখছে তাকে কাজে লাগাতে হবে।স্যাটেলাইট জরিপের মাধ্যমে সকলের ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমি বুঝিয়ে দিতে হবে। এই লক্ষে ভুক্তভোগীরা সমিতি করেছে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিকে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও সততার সাথে কাজ করতে হবে।
৫. পর্যটন খাত
আপনারা জানেন পর্যটন শিল্প পৃথিবীর বুকে এখন দাঁপিয়ে চলছে। পর্যটক আকর্ষণ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বহু দেশ,বহু দ্বীপ। তাই সন্দ্বীপের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য দরকার শৈল্পিক চোখ। নতুন জনপ্রতিনিধিকে এমন কেউ হতে হবে যিনি সন্দ্বীপকে সাজাবেন আপন তুলিতে।মায়াবী দ্বীপের পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে সন্দ্বীপের প্রতিনিধিকে সাজিয়ে নিতে হবে। তাহলে এখানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন খাত যুক্ত করতে পারলে বেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে আকৃষ্ট হবে।
এক সময় পরিব্রাজক ফিড্রিক ফিজার সন্দ্বীপ ভ্রমণ করেছিলেন। অপার সম্ভাবনা সন্দ্বীপকে উঁকি দিচ্ছে। পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে সন্দ্বীপে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সন্দ্বীপ প্রাকৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল তাই বেড়ীবাধ আমাদের একমাত্র রক্ষাকবচ।এই রক্ষাকবচকেও টেকসই করা অতীব জরুরী। বর্তমানে টেকসই বেড়ীবাধের নামে এখানে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।
যাহোক আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই দ্বীপের অঞ্চলের মানুষ তাদের কাঙ্খিত জন প্রতিনিধি বেছে নেবে এবং সমস্যার সঙ্গে সম্ভাবনার মেলবন্ধন যিনি ঘটাতে পারবেন, তিনি এই জনপদের মানুষের কাছে একজন নান্দনিক জননেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করার অফুরন্ত সুযোগটি পাবেন।
লেখক- ড. সালেহা কাদের প্রিন্সিপাল চেরী ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ। একজন শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক।