বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে চাঁদে সফল অবতরণ করেছে জাপানের চন্দ্রযান ‘মুন স্নাইপার’। শনিবার যানটি চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে। খবর রয়টার্সের।

জাপানের মহাকাশ সংস্থা বলেছে, তার স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম) চাঁদের পৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করেছে।

জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি তাদের লক্ষ্যের ১০০ মিটারের মধ্যে ‘মুন স্নাইপার’ নামক যানটি অবতরণের চেষ্টা করেছে। ল্যান্ডার স্লিম নির্ভুল লক্ষ্য অর্জন করেছে কিনা তা যাচাই করতে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

এখন পর্যন্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন ও ভারত সফলভাবে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।  পঞ্চম দেশ হিসেবে জাপান এই মাইলফলক অর্জন করেছে।

চাঁদের বুকের একটি গর্ত সংলগ্ন এলাকাকে মহাকাশযান নামানোর আদর্শ জায়গা বলে বেছে নিয়েছে টোকিওর মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা। এই গর্তটির নাম ‘শিওলি গহ্বর’। পৃথিবী থেকে চাঁদের সবচেয়ে কাছের অংশে (যে অংশ পৃথিবী থেকে দেখা যায়) খুব ধীরে ধীরে নির্বিঘ্নে স্লিম কে নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  সচিবালয়ে আগুন : উচ্চপর্যায়ের কমিটি, ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন

চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশযান নামানোর জন্য এমন এলাকা বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে আছে চাঁদের বুকের ঢাল। গর্ত সংলগ্ন এলাকার জমি ১৫ ডিগ্রির কম ঢালু; যা নভোযান নামানোর জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়।

গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর স্লিম এর সফল উৎক্ষেপণ করেছিল জাপান। তানেগাশিমা স্পেসপোর্ট থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল এ চন্দ্রযান যার ওজন প্রায় ৫৯০ কিলোগ্রাম।

যানটির সঙ্গে রকেটে চাপিয়ে অত্যাধুনিক এক্সরে স্পেস টেলিস্কোপ এক্সরিসম উৎক্ষেপণ করেছিল জাপান। ২০২১ সালে এই চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা নিলেও, উন্নত প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি নিতে ২ বছর সময় লেগে যায় জাপানের।

হিসাবমত, ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি স্পর্শ করার দুই সপ্তাহের পর স্লিম চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গত ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের কক্ষপথে যানটি প্রবেশের কথা জানিয়েছিল জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

আরও পড়ুন:  দ্বিতীয় দফায় মার্কিন সংস্থায় গণছাঁটাই

এ নিয়ে জাপান দ্বিতীয়বার চাঁদের মাটি স্পর্শ করার চেষ্টা করছে। এর আগের চেষ্টার সময় অবতরণ করতে গিয়ে মহাকাশযানটি ভেঙে পড়েছিল। এমাসে আমেরিকান একটি প্রাইভেট কোম্পানিও চাঁদের পৃষ্ঠে নামতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।

স্লিম চাঁদের পৃষ্ঠ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করবে না, বরং বৈজ্ঞানিক ক্যামেরা ব্যবহার করে গর্তের আশেপাশের পাথর নিয়ে গবেষণা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জাপানের ল্যান্ডার স্লিম (স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেশন মুন) চাঁদের বুকে নেমে খোঁজখবর নেবে। স্লিম থেকে যে রোভার নামবে চাঁদের বুকে, তা এক্স-রে ছবি তুলবে। সে কারণে এ অভিযানের নাম এক্স-রে ইমেজিং অ্যান্ড স্পেকট্রোস্কোপি মিশন (এক্সরিজ়ম)।

এক্সরিজম এর উদ্দেশ্য হল—কৃষ্ণগহ্বর, নিউট্রন স্টার ও সুপারনোভার উচ্চ মানের এক্স-রে তুলে জাপানের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানো। এর ফলে সেগুলোর গঠন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন বিজ্ঞানীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *