সন্দ্বীপ আসনে নৌকার টিকেট পেয়ে হ্যাট্রিক করলেন মাহফুজুর রহমান মিতা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রর্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চট্টগ্রাম-৩ আসন সন্দ্বীপ থেকে মনোনয়ন পেলেন মাহফুজুর রহমান মিতা।

মনোনয়ন প্রাপ্তির পর মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ। তিনি সন্দ্বীপকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করেছেন। সারাদেশের ন্যায় সন্দ্বীপেও নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকার বিকল্প নেই। তাই আবারও আমাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে।

এ আসন থেকে মিতার বিপরীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন এক ডজন নেতা। তাঁরা হলেন-স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আবদুল কাদের মিয়া, সাবেক পৌরসভা মেয়র জাফর উল্লাহ টিটু, চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন, মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সাবেক সাংসদ এম ওবায়দুল হকের সন্তান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য সরওয়ার জাহান জামিল শামিম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমানা নাসরিন রুমু এবং ইউছুপ আলি জীবন।

আরও পড়ুন:  এস আলম পরিবারের ৮১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

প্রসঙ্গত, মাহফুজুর রহমান মিতার বাবা সন্দ্বীপের সাবেক জননন্দিত সংসদ সদস্য প্রয়াত মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে সন্দ্বীপ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা জামাল উদ্দিন চৌধুরী। অপর দিকে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন মাহফুজুর রহমান মিতা। তিনি আনারস প্রতীকে পান ৩৪ হাজার ভোট। আওয়ামী লীগে দু’জন প্রার্থী থাকায় সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশা জয়ী হন। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে দলের টিকেট পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন মিতা।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পুনরায় বিজয়ী হন। একাদশ সংসদে তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর গত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন পৃথক চার দলের প্রার্থীরা। তবে গত দুই নির্বাচনে জয়ী হয়েছে নৌকা।

আরও পড়ুন:  রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত : কাদের

এর আগে আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপলক্ষে গত সপ্তাহের শনি থেকে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল। নৌকা প্রতীক পেতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন মোট ৩ হাজার ৩৬২ জন। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের বিপরীতে তারা মনোনয়ন ফরম কেনেন। প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন এ ফরম কিনেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তৃণমূলে পরীক্ষীত এবং জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেন।

তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
কেআই//

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *