যুদ্ধ বিরতির প্রথম দিনেই ১৯৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে গাজায়

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন গাজা উপত্যকায় ১৯৬টি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ফিলিস্তিন শাখা (পিআরসিএস)। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় পিআরসিএস এই তথ্য জানিয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, ‘আজ শুক্রবার গাজায় মোট ১৯৬টি ত্রাণ ও সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক রিসিভ করেছে পিআরসিএস। এসব ট্রাকের ৮টিতে ওষুধ ও মেডিকেল পণ্য, চারটি ট্রাকে হাসপাতাল শয্যা এবং বাকিগুলোতে খাদ্য, পানি ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় গত দেড় মাসে এই প্রথম একদিনে এত বেশি সংখ্যক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

আরও পড়ুন:  আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট, উপস্থাপন ২ জুন

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

টানা প্রায় দেড় মাসে যুদ্ধ চলার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েলের সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় হামাস। সে প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।

আরও পড়ুন:  পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রথমদিকে এই শর্ত আমলে না নিলেও পরে ইসরায়েলের নাগরিক, জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ২১ নভেম্বর সেই প্রস্তাবে সায় দেয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।

সেই অনুযায়ী শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) থেকে শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতি। বিরতির প্রথম দিন ২৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; আর ইসরায়েরের ডেমন ও মেডিগো কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল।

আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির এই চার দিন নিরাপদে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।-আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *