বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ

আগামী বছরও তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার সচিবালয়ে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জানা গেছে, ইজতেমার প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী ও দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদের অনুসারীরা অংশ নেবেন।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি বিশ্ব ইজতেমা দুটি ভাগ হয়ে গিয়েছিল। তাই বাধ্য হয়েই দুই পর্বে ইজতেমার আয়োজন করতে হয়। এর একটির নেতৃত্ব দেন মাওলানা জুবায়ের আহমদ এবং অন্যটির নেতৃত্ব দেন সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। দুজনই আগে একসঙ্গে তাবলিগ করতেন। এখন মতপার্থক্যের কারণে তারা দুজন দুই প্রান্তে চলে গেছেন। প্রতিবারই কে আগে করবেন এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননা তারা। আমাদের কাছে গড়িয়ে আসে। এবারই তাই আসছিল। আমরা এখানে বসছিলাম। তারা কে আগে করবেন, কে পরে করবেন, সে বিষয়ে একমত হতে পারেননি। আমাদের ওপর সিদ্ধান্তের ভার দিয়েছিল। আমরা তখন তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আমরা কোনো কিছু পরিবর্তন করব না। গতবার যেভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এ বছরও সেভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন:  কোরবানির পশু বেচাকেনায় ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা চালু

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশদারিত্বের বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা। ২০১৫ সালে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিরোধিতা করেন পাকিস্তান ও ভারতের কয়েকজন মুরব্বি।
তাই তাবলিগের মূল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজামুদ্দীন মারকাজের সমান ক্ষমতা দাবি করে আলমি শূরা নামে কমিটি গঠন করেন তারা।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশীদারিত্বের বিবাদে দিল্লি-লাহোর জড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়েই এর প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদেও ছড়িয়ে পড়ে এ বিভক্তি।

ওই সময়ের ১১ জন শূরা সদস্যের মধ্যে ৬ জন নিজামুদ্দীন মারকাজ ও মাওলানা সাদের পক্ষে অবস্থান নিলেও বাকি ৫ জন তার বিরোধিতা করেন। হেফাজতপন্থি আলেমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত হলে বাংলাদেশেও বিষয়টি নিয়ে উত্তাপ ছড়ায়। এ অংশের বাধায় মাওলানা সাদ ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি। বাংলাদেশে আসলেও ইজতেমায় অংশ না নিয়েই ফিরে যেতে হয় তাকে।

আরও পড়ুন:  সরকার বিজ্ঞান-প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক করেছে : প্রধানমন্ত্রী

ওই বছরে ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ভাগ হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ২০১৯ সাল থেকে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনা করেন তারা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *