সাংবাদিকদের জন্য শেখ হাসিনার সহায়তা নজিরবিহীন : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কল্যাণে ও গণমাধ্যমের বিকাশে যে ভূমিকা রেখেছেন তা নজিরবিহীন। 
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, সমালোচনা পথ চলাকে শাণিত করে এবং কাজের জন্য সহায়ক। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা আছে, সেটি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। 

হাছান মাহমুদ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতার পূর্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব দীপ আজাদের সঞ্চালনায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং বিএফইউজের আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য দেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত পনেরো বছরে দেশে পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ৪শ’ থেকে ১২শ’ ৬০টিতে উন্নীত হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিলো এবং এর পর বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল শেষ হওয়া পর্যন্ত ১০টি ছিলো। আজকে ৩৫টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে আরো কমপক্ষে ৫টি খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। অনলাইন গণমাধ্যম কতো হাজার সেটি একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়। এগুলোই প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা এবং তার সরকার কতোটুকু গণমাধ্যমবান্ধব।’

আরও পড়ুন:  উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের একটি সময় সাংবাদিকতা করেছেন, আজকের এই চত্বরের জায়গা বঙ্গবন্ধুই জাতীয় প্রেসক্লাবকে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা এখানেই দাঁড়িয়েই ২০১৪ সালে সাংবাদিকদের কল্যাণে একটি স্থায়ী তহবিলের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন- “আমি কতোদিন বাঁচবো জানি না কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিতে চাই”। তারই চিন্তাপ্রসূত, তারই উদ্যোগে ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এটি দেশের সমস্ত সাংবাদিক স্বীকার করে  এবং বলে এই ট্রাস্ট তাদের একটি ভরসার স্থল হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একজন সাংবাদিক মারা গেলে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে তার পরিবার ৩ লাখ টাকা অনুদান পায়, অসুস্থ সাংবাদিকরা অনুদান পান। আমরা ট্রাস্টের বিধিমালা সংশোধন করেছি, এখন থেকে অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের মেধাবী শিক্ষার্থী সন্তানেরাও অনুদান পাবেন।’

আরও পড়ুন:  প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

তিনি বলেন, ‘সবাইকে অবাক করে করোনাকালে আমরা ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দিয়েছি। দেশব্যাপী ৭ হাজারের বেশি সাংবাদিক অনুদান পেয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপালসহ উপমহাদেশের কোনো দেশে এটি হয়নি। এমন কি ইউরোপের কোনো দেশেও  সাংবাদিকদের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ ছিলো না, যেটি জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন।’
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশের নামে ২৮ অক্টোবর কি করেছে আপনারা জানেন। সাংবাদিকরা কোনো দল করে না, তারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে গিয়েছিলো এবং ৩২ জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছে, যার মধ্যে ২০ জনই বিএনপি বিটের। একজন সাংবাদিককে মাটিতে টেনে-হিঁচড়ে সাপকে যেভাবে মারা হয়, সেভাবে মারা হয়েছে, ভাগ্য ভালো তার মাথায় হেলমেট ছিলো। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

তিনি বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাবো, সাংবাদিকদের যারা নির্যাতন করেছে আহত করেছে, পিটিয়েছে সেই দুস্কৃতিকারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করুন, কলম ধরুন, পত্রিকার পাতায় লিখুন, টেলিভিশনে প্রতিবেদন পেশ করুন। তবে একইসাথে উদ্বেগ প্রকাশ করি যে, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং আরো যে সমস্ত সংগঠন আছে তারা একজন সাংবাদিক নিয়েও অনেক সময় বিবৃতি দেয়, আর ২৮ তারিখ ৩২ জনকে পেটানো হলো, এতো ঘটনা ঘটলো, কোনো বিবৃতি নাই। আমি সাংবাদিকদেরকে অনুরোধ করবো, তাদের কাছে চিঠি লেখার জন্য যে তারা কেন নিশ্চুপ।’

আরও পড়ুন:  যৌন হেনস্তার অভিযোগ,যা জানালেন মোনালি

ওয়েজবোর্ড নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘৯ম ওয়েজবোর্ড প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন কিন্তু কিছু সংবাদপত্র মালিক মামলা করায় সেটি বন্ধ রয়েছে। মালিক পক্ষকে বিনীতভাবে অনুরোধ, ৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত এবং কথায় কথায় ছাঁটাই উচিত নয়। আর ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে ফাইল উপস্থাপনের জন্য বলেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *