সুখবর দিল এডিবি : বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ে

মোহাম্মদ ফয়সাল আলম:

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন, “এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর ২০২৩,” প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা বাংলাদেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়েছে।

এডিবি মনে করছে যে চলতি অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতি কমে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। এ পূর্বাভাসের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা, এবং বিশ্ববাজারে অজ্বালানি পণ্যের দামের কিছুটা পতন। এই উপাদানগুলো মিলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মূল্যস্ফীতিকে আরও কমিয়ে আনতে নীতিগত পদক্ষেপগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গড় মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি অবস্থান করছে। যদিও গত দুই মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছিল, আগস্টে তা আবার বেড়ে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষত সাধারণ মানুষের জন্য, যাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:  কাদের জোরে এমন ত্রাস চালায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা?

এদিকে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে। এর আগে জুলাই মাসে প্রকাশিত আউটলুকে এডিবি একই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও, এই প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে সরকারের নীতিমালা এবং বাস্তবায়ন ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।  “এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও)” প্রতিবেদন অনুযায়ী মন্তব্য করেছে যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেছেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে অর্থনৈতিক কার্যাবলী পরিচালনা করছে। তারা উল্লেখ করেছেন যে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সমালোচনামূলক সংস্কারের অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

আরও পড়ুন:  কোরবানি করতে গিয়ে আহত দেড় শতাধিক

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেছেন যে কাঠামোগত সংস্কারগুলির মধ্যে জনসাধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা, অভ্যন্তরীণ সম্পদের সংহতি বৃদ্ধি করা, সরবরাহের উন্নতি ঘটানো এবং আর্থিক খাতকে আরও দৃঢ় করার বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং মাঝারি মেয়াদে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই সংস্কারগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এটি সরকারের নীতি এবং পদক্ষেপগুলির প্রভাব প্রকাশ করে যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *