নিম্নচাপে উত্তাল সাগর, ২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

ভারতের ঝাড়খণ্ড ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সাগর উত্তাল থাকায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

একই কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে ১ থেকে ২ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ-উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ ঝাড়খণ্ড ও আশেপাশের এলাকায় গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, গাঙ্গেয় পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আরও পড়ুন:  আগামী ৫ দিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়- খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরণের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

সমুদ্র বন্দরগুলোতে দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, গভীর এই স্থল-নিম্নচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা- দেশের এই চার সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  কোপা আমেরিকা জেতাই হবে মেসির জন্মদিনের সেরা উপহার

গভীর নিম্নচাপ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে শনিবার রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে ধেয়ে যাচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আলফ্রেড’

এছাড়া, দেশের অন্যত্র দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *