চা শ্রমিকদের জীবনযাপনের উপযোগী মানবিক মজুরি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ২৭ বিশিষ্ট নাগরিক। শুক্রবার তাঁদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান ১২০ টাকা মজুরি কিংবা এর সঙ্গে আরও ১৪ টাকা যোগ করে ১৩৪ টাকা করা হলেও তা বিদ্যমান উচ্চমূল্যের বাজারে কখনোই জীবনযাপনের উপযোগী হতে পারে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ব্রিটিশ শাসন অবসানের প্রায় ৭৫ বছর পরও বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক নীতিতেই চা বাগানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে একজন শ্রমিক যে মজুরি পাচ্ছেন, তা দিয়ে শ্রমিক ও তাঁর পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। অথচ মজুরি বাড়ানোর দাবিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে মালিকরা শ্রমিকদের রেশন সুবিধা এবং ২০ কেজির বেশি চা পাতা তুলতে পারলে বেশি মজুরি দেওয়ার বিষয়টিকে জোর প্রচার করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বহুদিন থেকেই শ্রমিকদের অভিযোগ- রেশনে যে চাল বা আটা দেওয়া হয় তা কখনোই ঘোষিত পরিমাপের পরিমাণ পাওয়া যায় না। এ ছাড়া একজন শ্রমিকের পক্ষে সারাদিনে ২০ কেজি পাতা তুলতে পারাটা সহজ কাজ নয়। কালেভদ্রে এক-দু’জন শ্রমিক ২০ কেজির চেয়ে বেশি পাতা তুলতে পারেন। এই বাড়তি পাতার জন্য যে মূল্য পরিশোধ করা হয়, তা কেজিপ্রতি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চা বাগানে শ্রমিকদের শোষণ থেকে মুক্তির জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল বারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. জোবায়দা নাসরিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত প্রমুখ।