ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশ্ববাজারের সাথে যুক্ত করতে শীঘ্রই দেশে আসছে পেপ্যাল: গভর্নর

পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ শীঘ্রই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে চাইছে এবং এর ফলে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান।

গভর্নর বলেন, ‘পেপ্যাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার মাধ্যমে ছোট চালানে পণ্য রপ্তানি করা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। পেপ্যালের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম চালু হলে তারা সহজেই ইউরোপ, আমেরিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পণ্য পাঠাতে পারবেন এবং দ্রুত পণ্যের দাম দেশে আনা সম্ভব হবে।’

আরও পড়ুন:  ক্রাইমিয়ায় রুশ সাবমেরিন ডুবিয়ে দেয়ার দাবি ইউক্রেনের

তিনি আরও করেন, ‘বর্তমানে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অভাবে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বিদেশ থেকে টাকা আনার সময় বিড়ম্বনায় পড়েন। অনেক সময় তারা তাদের পারিশ্রমিকও পান না। পেপ্যাল চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।’

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীর ব্যাংক বা কার্ডের সঙ্গে নিরাপদভাবে সংযুক্ত হয়ে দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে।

পেপ্যাল ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য সুরক্ষা এবং রিফান্ডের সুবিধাও দেয়। বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশে ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  মূল্যস্ফীতিতে আমরা স্বস্তির দিকে যাচ্ছি: গভর্নর

নগদ লেনদেন কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশের দুর্নীতির মূলেই রয়েছে নগদ টাকার লেনদেন। যেখানে যেখানে দুর্নীতি আছে, সেখানে সেখানে নগদ লেনদেন জড়িত।’ তিনি জানান, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাপে ধাপে নগদ লেনদেন কমানোর পরিকল্পনা করছে।

কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘বর্তমানে মোট ঋণের মাত্র ২ শতাংশ কৃষি খাতে দেওয়া হয়। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। এছাড়া এসএমই ঋণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থাকলেও ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার অভাবে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা যাচ্ছে না।’

খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টন। এখন তা প্রায় ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে, যা একটি বিশাল অর্জন।’

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন আহসান এইচ মনসুর

অনুষ্ঠানে কৃষিখাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮ জন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পাঁচ শতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে এই বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *