চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোপানোর বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে- দুই ছাত্রকে কোপানোর পর বাসার ছাদ থেকে ফেলা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তার নাম রাজিউর রহমান রাজু। তিনি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, তবে বিভাগের নাম জানা যায়নি। এছাড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, সড়কে ও ধানক্ষেতে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রামদা দিয়ে কোপানো হচ্ছে।
ভাড়া বাসার দারোয়ান এক ছাত্রীকে মারধর করেন- এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে হামলার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তার মধ্যে ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সাদা টি-শার্ট পরা দুই শিক্ষার্থীকে ভবনের ছাদে সাত-আটজন মিলে মারধর করছে। এদের মধ্যে একজন রামদা দিয়ে তাদেরকে কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তাদেরকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। নিচে পড়ার পরও তাদেরকে ছাদ থেকে ইটের টুকরো নিক্ষেপ করে আঘাত করা হয়।
এক মিনিটের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের পাশে একটি ধানক্ষেতে এক শিক্ষার্থী বসে আছে। হঠাৎ তিন-চারজনের একটি দল রামদা নিয়ে তাকে হামলা করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীটি মাটিতে পড়ে গেলে তারা তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।
দুই মিনিটের আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, টিশার্ট পরা এক শিক্ষার্থীকে বাসার সামনের সড়কে রামদা নিয়ে কোপাচ্ছে জোবরা গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা। তার সঙ্গে থাকা আরেকজন লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে সেই শিক্ষার্থীকে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গতকালের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের হাতেই এমন রামদা দেখা গেছে। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ তানভীর হায়দার আরিফ বলেন, ‘আগেও অনেকবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বিরোধ হয়েছে। কিন্তু এভাবে রামদা দিয়ে গণহারে আক্রমণের ঘটনা এটিই প্রথম। রামদাসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যারা হামলা করেছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে আইনের আওতায় আনা হবে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও অন্তত ১৮০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ ঘটনায় তাদের পক্ষের আহত হয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এ ধারা বলবৎ থাকবে। রোববার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।







