আমার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা একেবারেই ভিত্তিহীন: সজীব ওয়াজেদ

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে জমি বরাদ্দ নিয়ে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলাগুলো একেবারেই ভিত্তিহীন, পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপপ্রচারের অংশ।

শুক্রবার (২ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজের এক পোস্টে তিনি এ দাবি করেন।

পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে তিনটি কথিত নিয়মভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ১. আমরা নাকি নির্ধারিত ফরমে আবেদন করিনি; ২. আমাদের নামে রাজউকের আওতায় জমি থাকার পরও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে; ৩. আবেদনকারীদের তালিকায় নাকি আমাদের নাম ছিল না।

সরকার চাইলে জমি বরাদ্দ দিতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালের রাজউক (জমি বরাদ্দ) বিধিমালার ১৩(ক) ধারা অনুযায়ী — যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকার চাইলে বিশেষ অবদানের জন্য (যেমন: সরকারি দায়িত্ব, জনসেবা বা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অবদান রাখা) ব্যক্তিদের জমি বরাদ্দ দিতে পারে। এছাড়াও, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য এবং রাষ্ট্রীয় অবদান রাখা সরকারি কর্মকর্তাদের জমি বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও ওই বিধিমালাতেই আছে।

আরও পড়ুন:  স্টারমারের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখা

অভিযোগকে অপ্রাসঙ্গিক আখ্যা দিয়ে জয় বলেন, আমার পরিবারের সদস্যরা এই বিশেষ বিধানের আওতায় (১৩(ক)(১)(ক) এবং ১৩(ক)(১)(গ)) মন্ত্রী এবং শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে আবেদন করেছিলেন। এই বিধান অনুযায়ী, কারও নামে রাজউক এলাকায় অন্য জমি থাকলেও সেটা কোনো বাধা না।

যথাযথভাবে প্রক্রিয়ায় আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম, যিনি তা যথাযথভাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে সুপারিশসহ প্রেরণ করেন। সুতরাং, বলা হচ্ছে যে আমরা সঠিক ফরমে আবেদন করিনি—এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

‘এরপর গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় বিধি অনুযায়ী (অ্যালোকেশন অব বিজনেস ১৯৯৬) আবেদনগুলো অনুমোদন করে এবং রাজউককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলে। রাজউক তা বরাদ্দ কমিটির সামনে উপস্থাপন করে, এবং নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়।’

আরও পড়ুন:  একুশে পদক পেলেন ফেরদৌস আরা

জমিগুলো বিনামূল্যে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেক ধাপে নিয়ম মেনে কাজ হয়েছে। আমরা সরকার নির্ধারিত দামে কিনেছি।

দুদক থেকে নিরপেক্ষতা আশা করাই বোকামি দাবি করে তিনি জানান, দুদক একটা পুরোপুরি রাজনৈতিক হুমকির যন্ত্র হয়ে উঠেছে— আমার পরিবারকে হয়রানি আর বদনামের জন্য। দুদকের চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন, যাকে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করেছিল, এখন এই অপারেশনের প্রধান। তার একমাত্র যোগ্যতা, তিনি বিএনপি-ঘনিষ্ঠ আমলা ছিলেন, খালেদা জিয়ার প্রাইভেট সেক্রেটারি ছিলেন।

পোস্টে তিনি দাবি করেন, মামলার ভেতরে অনিয়মের কোনো তথ্য প্রমাণ নেই, সবই প্রচারণা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *