‘শিরক’ তকমা দিয়ে কাটা হলো ২০০ বছরের বটগাছ, ভিডিও ভাইরাল

মাদারীপুর সদর ইউনিয়নের শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরের কান্দি এলাকায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছ কেটে ফেলেছেন স্থানীয় আলেমরা। ‘বিদআত’সহ নানা কারণ দেখিয়ে গাছটির বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। গাছ কাটার ঘটনাটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল থেকে প্রায় ২০০ বছরের পুরানো গাছটি কাটার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে সোমবার সকাল ৯টার দিকে গাছটি কাটা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এরপর একে একে ডালপালা থেকে শুরু করে মূল দণ্ডায়মান গাছটির প্রায় ৭৫ শতাংশ কেটে ফেলা হয়।

স্থানীয়রা জানান, কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত বটগাছটি ‘অলৌকিক ক্ষমতার’ অধিকারী বলে বিশ্বাস করে অনেকে। এ কারণে প্রাচীন এই বটগাছের গোড়ায় অনেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন:  ক্লিওপেট্রা, ক্ষমতা ও রহস্যের রানি

শিরখাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্থানীয় আলেমরা বটগাছটি কেটে ফেলেছেন। তবে গাছটি কাদের নেতৃত্বে কাটা হয়েছে সে তথ্য আমি এখনও পাইনি। অনেক স্থানীয় বাসিন্দাই মনে করছেন গাছটি কাটা ঠিক হয়নি। তবে তারা ভয়ে কথা বলছেন না।

ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজম খান বলেন, ওই বটগাছটির নিচে কিছু লোক ‘আচার’ পালন করত, যা আলেমরা আপত্তিকর মনে করেন। ইসলামে এ ধরনের বিধি-বিধান না থাকার কারণেই গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কারণেই সবাই একত্রিত হয়ে বটগাছটি কাটা শুরু করেন। তারা কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।  ইউনিয়নের সব গ্রাম থেকেই ওই ঘটনাস্থলে লোক গেছে, তাদের মধ্যে তার এলাকার মানুষও ছিল।

আরও পড়ুন:  আজ রাতে ঈদের ‘ইত্যাদি’

গাছ কাটার ওই ভিডিও ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই। ১৪ সেকেন্ডের একটি  ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন লোক গাছটি চারপাশে দাঁড়িয়ে আছে। একটি করাত দিয়ে গাছে শাখা-কাণ্ড কাটছেন দুজন ব্যক্তি। বাকিরা তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

এসময় এক ব্যক্তি বলে ওঠেন, ‘পোচ (কাটা) হবে মুজাহিদ ভাই ঠিক আছে। শিরকের আস্তানা ইনশাল্লাহ গুঁড়িয়ে দিতেসে..’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এই বিষয়টি সোমবার রাতে জানতে পেরেছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি পরবর্তীতে এ বিষয়টি আপনাদেরকে জানাতে পারব—যে কারণে বিষয়টি নিয়ে আমি এখন কথা বলতে চাচ্ছি না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *