ভারত ও চীনের পণ্যে আবারও পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

শুক্রবার রাতে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদিকে তিনি বলেছেন- ভারত যে হারে শুল্ক আরোপ করে, যুক্তরাষ্ট্রও সেই হারে করারোপ করবে। 

তিনি আরও বলেন, এত দিন তা (পাল্টা শুল্ক আরোপ) করা হয়নি; কিন্তু এবার সে জন্য তৈরি হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। বাণিজ্য পরামর্শক সংস্থা জিটিআরআইয়ের মতে, পুরোদস্তুর চুক্তি না করে দুই দেশের শুল্কব্যবস্থা ঢেলে সাজানো উচিত। সে ক্ষেত্রে ভারত কিছু পণ্য চিহ্নিত করে শুল্ক শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনুক; একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও উচিত হবে একই পরিমাণ পণ্য থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা। এতে বাণিজ্য চুক্তির তুলনায় কম ছাড় দিতে হবে।

আরও পড়ুন:  চলতি বছর ডেঙ্গুতে ঢাকায় ১০০ জনের মৃত্যু

অন্যদিকে ভারতের শুল্ক কমানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নীতি আয়োগের প্রধান নির্বাহী বিভিআর সুব্রামানিয়ামও। তবে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের দাবি, দুই দেশের ঘোষিত বাণিজ্য চুক্তি হবে সেরা চুক্তি (মাদার অব অল ডিলস)।

জিটিআরআইয়ের বক্তব্য, ভারতের উচিত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা প্রায় ৯০ শতাংশ শিল্পপণ্যে শুল্ক কমানো। সেই আলোচনা শেষ করা দরকার এপ্রিলের আগেই। তাদের যুক্তি, এভাবে শুল্ক কমানো বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়মের বিরোধী তা ঠিক; কিন্তু এতে চুক্তির তুলনায় কম ক্ষতি হবে। কারণ, চুক্তি করলে ভারতকে অনেক ছাড় দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপে কতটা ক্ষতি হবে ভারতের?

যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে ভারতের বাণিজ্য কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে— এ প্রশ্নে ভারতীয় বিশেষজ্ঞমহল থেকে বিশ্বখ্যাত মান নির্ণয়কারী সংস্থাগুলো দ্বিধাবিভক্ত। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস দাবি করছে, ভারতীয় অর্থনীতিমূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদা নির্ভর হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ভারতের ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলবে না। আগামী দুই বছর ভারতের প্রবৃদ্ধিও হবে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার ভারত ও নেপালের চেয়ে দ্বিগুণ

আরেক বৈশ্বিক সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসনকে ঠিক কোন ধরনের শুল্ক আরোপ করবে, তার ওপর নির্ভর করবে ভারতের রপ্তানি ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউস কার্যালয় থেকে ছয় মাসের মধ্যে এই পাল্টা শুল্কের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। সেই প্রতিবেদন সামনে এলেই বোঝা যাবে, কতটা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারত।

সূত্র: এনডিটিভিএক্সপ্রেস ইন্ডিয়াবিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ইকোনমিক টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *