বৃষ্টিতে ডুবল ঢাকার অলিগলি

ঢাকায় টানা বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যাওয়ার সমস্যা নতুন নয়। নগরীর অধিকাংশ এলাকায় এ ধরনের জলাবদ্ধতা প্রতিনিয়ত নগরবাসীর জীবনকে ব্যাহত করে। আজকের বৃষ্টিতে যেমন গ্রিন রোড, মিরপুর, ধানমন্ডি, বনানী, মোহাম্মদপুর, মালিবাগ-মগবাজার, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বাংলামোটর, বনশ্রী, বাড্ডা এবং আজিমপুরের সড়কগুলোতে কোমরসমান পানি জমে গেছে।

কল্যাণপুরের প্রধান সড়কও পানির নিচে চলে গেছে, বিশেষ করে কল্যাণপুর নতুন বাজার মোড় থেকে কল্যাণপুর গার্লস স্কুল পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণভাবে তলিয়ে গেছে। রিকশার পাদানিতে পানি উঠে যাচ্ছে এবং পথচারীদের হাঁটু ডুবে যাচ্ছে।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে নগরবাসীর জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হতে পারছে না, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত কষ্টকর।

আরও পড়ুন:  শেখ হাসিনার সফরে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে : চীন

ঢাকার ধানমন্ডি ২৭, গ্রিন রোড, মিরপুর, ও মগবাজার এলাকার প্রধান সড়কসহ প্রায় সব অলিগলিতে হাঁটু সমান এবং কোথাও কোথাও কোমরসমান পানি জমে গেছে। এর ফলে পথচারীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন, তেমনি প্রাইভেটকার ও সিএনজির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অনেক গাড়ি রাস্তার মধ্যে আটকে থাকতে দেখা গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে গাড়ির ধীর গতির ফলে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক যানজট।

নগরবাসীদের জন্য সকালটি অনেকটাই পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে কাটাতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও রিকশা ও ভ্যান চালকরা সড়ক পারাপারে সহায়তা করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন, আর মানুষও বাধ্য হয়ে এসব বাহনে বেশি ভাড়া দিয়ে পারাপার করছেন।

টানা বৃষ্টিতে অনেক দোকান ও মার্কেটে পানি ঢুকে গেছে। নিউমার্কেটের নিচতলার কিছু দোকানে পানি ওঠার খবর পাওয়া গেছে, যা দোকানিদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়েছে।

আরও পড়ুন:  ৫০ পুলিশ সুপারসহ ৭৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় রাজধানীতে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের সর্বত্রই হয়েছে এবং এমনটা সারাদিন ধরেই চলতে পারে।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে টেকসই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং পরিকল্পিত নগরায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলির পানি নিষ্কাশনের জন্য কার্যকর ড্রেনেজ সিস্টেম এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

dakdiyejai.news

আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও রাতে পর থেকেই বৃষ্টির ধারা কমে আসবে। আগামীকাল থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও খানিকটা কমে যেতে পারে। বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানের তাপমাত্রা কমে আসবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, রাজধানীতে সকাল থেকে তিন ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। তবে সব তথ্য এখনও এসে পৌঁছায়নি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খুলনায়, যেখানে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন:  গোয়েন্দা তৎপরতায় গ্রেপ্তার সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ

এ ধরনের অবস্থায় নগরবাসীদের সাবধানতা অবলম্বন করে চলাফেরা করা উচিত এবং অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। পানি নিষ্কাশনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে নগরজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *